যে কারণে শ্রেণি কার্যক্রম বর্জন করলো কুবির শিক্ষক সমিতি।

লেখক: ফয়সাল মিয়া, কুবি
প্রকাশ: ২ years ago

গত ১৮ মার্চ বিকেলে সকল প্রকার ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সমিতির সভাপতি মো. আবু তাহের ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সাত দফা দাবি না মানায় ১৯ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি। তবে কোনো বিভাগে চূড়ান্ত সেমিস্টার পরীক্ষা থাকলে, তা চলমান থাকবে। ঈদের ছুটির পর শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা ডেকে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হবে। শিক্ষক সমিতির দেওয়া সাত দফা দাবিসমূহ হলো উপাচার্যের উপস্থিতিতে শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার, প্রক্টরের অপসারণ, ঢাকাস্থ গেস্টহাউস অবমুক্ত করা, অধ্যাপকদের পদোন্নতি, আইন মোতাবেক বিভাগীয় প্রধান ও ডিন নিয়োগ, শিক্ষক নিয়োগ, পদোন্নতি ও স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে আইন বহির্ভূত অবৈধ শর্ত আরোপ নিষ্পত্তিকরণ, বিতর্কিত শিক্ষাছুটি নীতিমালা রহিত করণ, ৮৬তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত স্থায়ীকরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল। তবে শিক্ষক সমিতির সেই ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম দিনেই মোট আটটি বিভাগে চলেছে শ্রেণি কার্যক্রম। এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, শিক্ষক সমিতির ঘোষণা অমান্য করে যে বিভাগ বা শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়েছেন শিক্ষক সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) কাজী এম. আনিছুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের যে দাবিগুলো সেগুলো আমি বিশ্বাস করি যে প্রশাসনের সাথে তারা একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারে। তা না করে তাদের এই ক্লাস বর্জনের সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো এটা আমার জানা নেই। আমি আমার বিবেকবোধের জায়গা থেকে ক্লাস নিয়েছি যেনো শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ২০ মার্চ তারিখে পূর্ব নির্ধারিত সবগুলো সেমিস্টার পরীক্ষা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে।এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ আজ(২০ মার্চ) পূর্ব নির্ধারিত সকল সেমিস্টার পরীক্ষা হয়েছে। কোন বিভাগ থেকে পরীক্ষা পিছানোর জন্য আবেদন করেনি।’ এদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম উল্লেখ করে চারজন আবাসিক শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন। তারা হলেন শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, কাজী নজরুল ইসলাম হলের আবাসিক শিক্ষক অর্ণব বিশ্বাস ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের আবাসিক শিক্ষক জয় চন্দ্র রাজবংশী। অন্য দিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিধি-বহির্ভূতভাবে ডিন নিয়োগ ও সিন্ডিকেট সভায় মতামত প্রদানের সুযোগ সীমিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে সিন্ডিকেট সদস্যের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. শেখ মকছেদুর রহমান।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন শিক্ষকদের শ্রেণি কার্যক্রমে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক প্ল্যান অনুযায়ী গত দুই বছরে কোন সেশন জট হয়নি। যে সকল শিক্ষকগণ এখনো শ্রেণী কার্যক্রম থেকে বাইরে রয়েছেন, তাদেরকে সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে পাঠদান কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।