হল খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম কুবি শিক্ষার্থীদের

লেখক: ফয়সাল মিয়া, কুবি
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) সবগুলো হল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুলে দেওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে কুবির শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় নিজেরাই ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে তারা।

আজ রবিবার (৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ হলের শিক্ষার্থীরা এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হলসমূহ বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের আশেপাশের এলাকা সহ বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাসা-বাড়িতে অবস্থান করছে, যা বর্তমানে পুলিশের নির্বিচারে ধরপাকড় ও নানারকম অনিরাপত্তার কারণে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যেহেতু কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহায়তার কথা সম্প্রতি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে। তাই আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলছি, আগামী ২৪ ঘন্টার (০৪ আগস্ট, ২০২৪- রবিবার দুপুর ১২ ঘটিকা) মধ্যে যেকোনো ভাবে সকল হলসমূহ খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা রবিবার (০৪ আগস্ট ২০২৪, দুপুর ১২ ঘটিকার পর) নিজ নিজ হলসমূহে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে নিজেরাই উঠে যাবার ব্যবস্থা করবে। সেক্ষেত্রে, যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবে।”

ফার্মেসী বিভাগের ১১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মাহমুদা তাহিরা জানান,”প্রশাসন থেকে বলা হলো শিক্ষার্থীদেরকে হল থেকে বের করে হল বন্ধ করা হচ্ছে নিরাপত্তার স্বার্থে, এবং সেটিও করা হলো রাত যখন সাড়ে আটটা। এতগুলো মেয়ে তখন যাবে কোথায়? অনেকেই পরিচিত বন্ধু-বান্ধবের মেসে আশ্রয় নিলো, যাদের বাড়ি কাছে তারা পরদিন চলে যেতে পারলো। কিন্তু মেসেও এখন রেহাই নেই, এলাকার ছাত্রলীগ বাড়িওয়ালাদের তাগাদা দিয়েই যাচ্ছে মেস খালি করে ফেলার জন্য, পুলিশও নাকি যেকোনো সময় রেইড দিবে। আমরা যদি সবাই বাড়িই যাবো, আমাদের যে ভাইবোনেরা রাস্তায় জীবন হাতে নিয়ে নামছে তাদের জন্য থাকবে কে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কি উচিত নয় এমন ক্রাইসিসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে বড় করে দেখা? হল খুলে দিতে এখনো এত কার্পণ্য কেন করছেন! আপনারা না দেখলে আমাদের সেইফটি এখন কে এনশিওর করবে?”

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান রিফাত জানান ” আগামীকাল রবিবার দুপুর ১২ টার মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর হল খুলার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।যদি প্রক্টর এই সময়ে হল খুলতে ব্যর্থ হয় তাহলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেকোনো মুল্যে যেকোনো সময়ে হলে প্রবেশ করবে।আর তখন ক্যাম্পাসে প্রক্টর পদত্যাগের আন্দোলন শুরু হবে।এই প্রক্টরের আমলে ক্যাম্পাসে অনেকবার বহিরাগতরা আক্রমণ করেছে, নাশকতার সৃষ্টি করেছে।প্রক্টর স্যার নিরাপত্তা শিক্ষার্থীদের দিতে ব্যর্থ।আর শিক্ষক সমিতির সভাপতি বলেছে তাদের ২ টি আন্দোলন চলমান,তাই তারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে আন্দোলনে পাশে দাড়াতে পারবে না।এই শিক্ষক সমিতির আমাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই।তারা যখন ভবিষ্যতে তাদের দাবী নিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করবে তখন আমরা শিক্ষার্থীদের তাদের পাশে পাবে না।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, “হলের বিষয়ে প্রক্টর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এই বিষয় হল প্রভোস্ট সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই বিষয়ে হল প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলতে হবে। হল খোলার বিষয়টি আমি উপাচার্যকে অবহিত করব। আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

নবাব ফয়জুন্নেসা হল প্রভোস্ট জিল্লুর রহমান বলেন, “এমন কোনো বিজ্ঞপ্তি আমি এখনো পাই নি। যদি পাই তাহলে উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবো। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবো”

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল প্রভোস্টকে একাদিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায় নি।