কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ এনে গতকাল (২৩ জুন) সকল প্রকার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে সংবাদ সম্মেলন করে কুবি শিক্ষক সমিতি। এরপর নিজ কার্যালয়ে শিক্ষকদের প্রতিবাদের মুখে সকল ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার আশ্বাস দেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম. আবদুল মঈন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ উপাচার্যের কাছে নিয়োগ বন্ধের দাবি জানাতে গেলে উপাচার্য উদ্ভূত সমস্যা সমাধান না হওয়ার আগে কোন নিয়োগ দিবেন না বলে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের।
জানা যায়, আজ (২৪ জুন) ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যান বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি স্থগিত করা হয়। এছাড়াও আগামী ২৭ তারিখে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের নিয়োগ প্রক্রিয়া হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সেটিও এখন হবেনা বলে জানা যায়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পদে নিয়োগ কার্যক্রমের জন্য আবেদন গ্রহন করা হয়েছে। যেখানে গত ২৮ এপ্রিল শিক্ষকদের উপর হামলায় অংশগ্রহণকারী বহিরাগত সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন মামলার আসামি সাবেক শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই আবেদন করেছে বলে জানা যায়। এবং জোর গুঞ্জন রয়েছে এদের সবাইকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন উপাচার্য আবদুল মঈন। এর প্রেক্ষিতে শিক্ষকদের আশঙ্কা তাদের উপর হামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের পূর্বেই উপাচার্য শিক্ষক ও কর্মকর্তা পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।
এবিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের নিজস্ব নীতিমালাকে এই উপাচার্য সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করে ইউজিসি (বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন) কর্তৃক প্রণীত শিথীলযোগ্য নীতিমালাকে তিনি এখানে শর্তাবলী হিসেবে প্রয়োগ করতে চান। যা এখনো কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই করেনাই।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, উপাচার্য এই শিথীলযোগ্য নীতিমালাকে কাজে লাগিয়ে তার পছন্দের প্রার্থীদেরকে এখানে নিয়োগ দিতে চান। এবং এই বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া যোগ্য শিক্ষক পাওয়ার ক্ষেত্রেও অন্তরায়।
তিনি আরও বলেন, এই বিতর্কিত নিয়োগকে বৈধ করতে এর আগেও কয়েকটি অবৈধ নিয়োগ এবং নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে ডিন নিয়োগ দেন এই উপাচার্য।
তবে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।