১৯৯০ সালের ২৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তৎকালীন সহ-সভাপতি শহীদ ফারুকুজ্জামান ফারুককে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী ঘাতক জামাতের রাজনৈতিক উত্তরসূরি, সন্ত্রাসী শিবির বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে।
স্বৈরাচার এরশাদের সামরিক দুঃশাসন এবং তার প্রবর্তিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বিলের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ছাত্র-গণআন্দোলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম নেতা ছিলেন শহীদ ফারুক। গণঅভ্যুত্থানের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদের পতন হলে ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্যোগে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ এর ব্যানারে ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল বের হয়। ওই মিছিলে শিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা অতর্কিত হামলা চালায় এবং গুলি করে। শিবিরের গুলিতে গুরুতর আহত হন পরিসংখ্যান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র, ক্যাম্পাসের অত্যন্ত মেধাবী ও জনপ্রিয় ছাত্রনেতা ফারুকুজ্জামান ফারুক। এই হামলা থেকে সেদিন রক্ষা পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকারাও। হামলায় আহত হবার পরদিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফারুকুজ্জামান ফারুক মৃত্যুবরণ করেন। শহীদ ফারুক হত্যার ৩৩ বছরে আমরা তাঁর হত্যার বিচার চেয়ে ব্যর্থ হয়েছি ঠিকই কিন্তু শহীদ ফারুকুজ্জান ফারুকের শোষণমুক্ত লাল দুনিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাঁর রক্তেভেজা সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী আজও লড়ে চলেছে এসব অন্ধকারের অপশক্তির বিরুদ্ধে।
শহীদ ফারুক তাঁর জীবন উৎসর্গের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করে গেছে হত্যা করে ছাত্র মৈত্রীর অদম্য লড়াইস্পৃহাকে দমানো যায় না। মৈত্রী সেনারা লড়তে জানে, মরতে জানে, হারতে জানে না।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ শহীদ ফারুকুজ্জামানের বাড়ি সরাইল উপজেলার নরসিংপুর গ্রামে পারিবারিকভাবে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্র মৈত্রী শহীদ ফারুকের সমাধি সৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণসহ দিনব্যপী কর্মসূচি পালন করছে।