বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ও ভাবনা

লেখক: বেরোবি প্রতিনিধি:
প্রকাশ: ১ বছর আগে

রংপুর শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দুরে ঢাকা কুড়িগ্রাম মহাসড়কের পাশে পার্কের মোড় নামক স্থানে গড়ে উঠে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা প্রসারের লক্ষ্যে ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। কৈশোর থেকে যৌবনের পথে। ১৬ থেকে ১৭ ই পদার্পণ। বর্তমানে ৬টি অনুষদের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২টি বিভাগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় দিবস নিয়ে শিক্ষার্থীরা কি ভাবছেন, তাদের ভবনা ও প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন বেরোবি সংবাদদাতা।

‘বাস্তবমুখী জ্ঞানের উৎস হোক বিশ্ববিদ্যালয়”
আমরা চাই সেশনজট মুক্ত ক্যাম্পাস ও সম্পূর্ণ আবাসিক সুবিধা। উত্তরের জনপদ দেখে আর কোনো বৈষম্য চাইনা আমরা। নতুন আঙ্গিকে নতুন বাজেট আসুক, উন্নয়নমূলক কাজ হোক, আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় আরও সমৃদ্ধ হোক। গতানুগতিক শীট কালচার থেকে বেড়িয়ে বাস্তবমুখী জ্ঞান উৎপাদন হোক।
ছাত্র রাজনীতি থাকবে কি থাকবে না এই প্রসঙ্গে বলতে চাই, আমরা শুধু পড়াশোনা করে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা মূলক পরিক্ষায় অংশ নিয়ে দেশের প্রশাসনসহ অন্যান্য জায়গায় পৌছলেও এমপি বা মন্ত্রীত্ব আসে সেই রাজনৈতিক মতাদর্শ থেকেই। ঠিক এই জায়গাটায় মেধাবী তথা দেশের সূর্য সন্তানরা এগিয়ে না আসলে দেশটা আবার ফেসিস্ট রেজিমে চলে যাবে। তাই আমার প্রত্যাশা নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ চালু করা।
আরমান সাকিব
শিক্ষার্থী ; গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ।

‘পড়াশুনা ও স্বশিক্ষা কার্যক্রম একে অপরের সহায়ক ‘
” সামাজিক সংগঠনগুলোতে চর্চার মাধ্যমে ইতিবাচক গুণাবলি তৈরি হয়, দায়িত্বশীলতা বাড়ে এবং নেতৃত্বগুণ তৈরি হয়। বিগত সময়ে সামাজিক সংগঠনগুলো ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে রাজনীতির প্রভাব ও প্রশাসনিক জটিলতার জন্য বিভিন্ন রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ সালে বাঁধন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট, রংপুর জোন ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম শুরু করে এবং ১১ বছর ধরে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রকম সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এখন পর্যন্ত বাঁধন, বেরোবি ইউনিট কোনো স্থায়ী অফিস রুম পায়নি। বেরোবির নতুন প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি সামাজিক সংগঠনগুলোকে সহযোগিতার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করার পরিবেশ নিশ্চিত করুন। ”
মো: মাহামুদুল হাসান জিসান
সাধারণ সম্পাদক,
বাঁধন, বেরোবি ইউনিট, রংপুর জোন।

জ্ঞানের তকমা বৃদ্ধিতে লাইব্রেরি সমৃদ্ধিকরণ

“বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র হলো লাইব্রেরি যাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদপিন্ড বলে অভিহিত করা হয়।জ্ঞানের তকমায় পূর্ণতা লাভে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিকে সমৃদ্ধ করা জরূরী। প্রমথ চৌধুরীর ভাষায়, “লাইব্রেরীর সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়।” গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি শ্রেষ্ঠ প্লাটফর্ম। আর গবেষণার পূর্বশর্ত হলো বই পড়ার মাধ্যমে নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করা। গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরির বিশাল সংগ্রহশালায় নিজের রুচি, মনন ও প্রয়োজনীয় গ্রন্থ পাওয়া যায়। এই কারণে জ্ঞানার্জনের জন্য গ্রন্থাগার ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন।জ্ঞানলাভের সর্বোচ্চ জায়গা হচ্ছে লাইব্রেরি। জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় নামে খ্যাত লাইব্রেরি যেন সমৃদ্ধ হয়, আসন সংখ্যা এবং বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
আ স ম রোকনুজ্জামান নাহিদ
শিক্ষার্থী লোকপ্রশাসন বিভাগ

“শিক্ষার্থীদের চলাচলের ভোগান্তি কমানো হোক”
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৭০০০ এর অধিক। সে তুলনায় বাস অল্প কয়েকটি । এতে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসা যাওয়াই ভোগান্তিতে পড়তে হয় । অনেক সময়, বাস না পাওয়ায় অটো বা অন্য কোন পরিবহনে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাসের অর্ধেক শেষ হয়ে যায়। আর আমাদের বিশ্বাস নতুন যে উপাচার্য তিনি বিষয়টি খেয়াল করবেন। তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো চলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য, কিন্তু লক্ষ করলে দেখা যায় আমাদের ভার্সিটির বাসগুলো একই রুটে একই সময়ে বাসগুলো চলে, এজন্য আমরা শিক্ষার্থীরা অল্প একটু সময় দেরি করলে আর বাস পাই না। তাই বাসগুলো যদি ১০-১৫ মিনিট পর পর চলতো তাহলে আমাদের শিক্ষার্থীদের সুবিধা হতো।
আহসান হাবীব রকি
শিক্ষার্থী, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ

“বিশ্ববিদ্যালয় হোক শতভাগ শিক্ষা, গবেষণার প্রাণকেন্দ্র”
“বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটাই যে অর্থ ধারণ করে ঠিক সেরকমই একটা বিশ্ববিদ্যালয় আমরা চাই। শিক্ষায় গবেষণায় উন্নত মানের নির্দেশনা থাকবে। পাশাপাশি বাস্তবমুখী শিক্ষাও প্রদান করা হবে। এমন যেন না হয় যে যুগের সাথে শিক্ষার কোন মিল নেই, বা শুধু শিক্ষিত বেকার তৈরি করা হচ্ছে। সেই সাথে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ সচল থাকুক। আমরা দেখতে পাই যে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক পিছিয়ে তাই নতুন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় কে গবেষণার পরিবেশধর্মী করে তুলবেন। যাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকদের জ্ঞান চিন্তাভাবনা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কে সামনের দিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় হোক সারা বাংলাদেশের আদর্শ গবেষণা প্রাণকেন্দ্র।”
রিপন মিয়া
শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ
“লেজুড়ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হোক ”
বীর শহীদ আবু সাঈদ ভাইকে,যে ছাত্র রাজনীতি ক্যাম্পাসে গলা চেপে ধরেছিলো।সেই ছাত্র রাজনীতি সহ সকল ধরণের ছাত্র, শিক্ষক রাজনীতি ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ করা হোক। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ছাত্র সংসদ চালু করা হোক । যাতে শিক্ষার্থীদের গনতান্ত্রিক চর্চার পথ সুগম রাখতে হবে।