পিতামাতা ও পরিচয়হীন পথশিশুদের জন্য সহজ উপায়ে অনলাইনে জন্মনিবন্ধনের আবেদন করার প্রক্রিয়া চালু না থাকায় এসব শিশুরা জন্মসনদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জন্ম সনদ না থাকায় এসব শিশুদের স্কুলে ভর্তি হতে না পারাসহ সরকারের নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাই সহজ প্রক্রিয়ায় এসব পথশিশুের জন্ম নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৩০মে) বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের আওতাধীন পোগোজ ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজে আয়োজিত জন্মনিবন্ধন বিষয়ক এক আলোচনা সভায় পথশিশুরা এ দাবি জানান।
সভায় পরিচয়হীন পথশিশুরা বলেন, জন্মনিবন্ধন না থাকায় আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আমি পড়াশোনা করতে চাই কিন্তু আমার জন্মনিবন্ধন না থাকার কারনে স্কুলেও ভর্তি হতে পারছিনা। আবার সরকারের কোন উপবৃত্তিও আমরা পাই না। সরকারের কাছে আমাদের একান্ত দাবি যাতে আমাদেরকে সহজ উপায়ে জন্ম সনদ প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর মো আব্দুল্লাহ আবু বলেন, জন্মের পর থেকেই শিশুরা তাদের অধিকার নিয়ে জন্মায়। কিন্তু যে সকল শিশুদের মা-বাবার পরিচয় জানেনা পারে না, তারা রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এতিম, অভিভাবহীন শিশুদের জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। পরিচয়হীন শিশুদের জন্মনিবন্ধন বিষয়টা রাষ্ট্রীয় বিষয়। জন্ম নিবন্ধন সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রীয়ভাবে সমাধান করতে হবে। সচিব, মন্ত্রীদের কাছে পথশিশুদের জন্মনিবন্ধনের বিষয় তুলে ধরতে হবে এবং এ বিষয়ে নীতিমালা তৈরী করতে হবে। এসময় তিনি এ বিষয়ে সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার ব্যাপারে জোর দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএমপি কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ মাহফুজুর রহমান মিয়া বলেন, “কোনো কাজের যখন সমাধান দেওয়া যায় না, ব্যাখ্যা থাকে না তখন মহামান্য হাইকোট নিজের আমলে নিয়ে সমাধান দেন। তিনি পথশিশুদের জন্মনিবন্ধন এর জন্য হাইকোর্ট এ যেতে বলেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে বারাকার প্রোগ্রাম অফিসার অ্যান্থনী প্রিন্স গমেজ বলেন, পথশিশুদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করাতে হবে। এসময় তিনি সকলকে পথশিশুদের কল্যাণে এগিয়ে আসতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে, এডভোকেট রিপন, ছোট কাটরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সাহারা খাতুন সিএমএম কোর্ট এর প্রবেশন অফিসার আল-আমিন বক্তব্য রাখেন। এসময় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, সামাজিক দল, অভিভাবক, শিশুদলের সদস্যরাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু উপস্থিত ছিলেন।