পহেলা বৈশাখ বাঙালির প্রাণের উৎসব,বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের অনন্য রূপ, বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রথম দিন। বাঙালি নানা উৎসব আনন্দের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় নতুন বছরকে।এই দিনটি বাঙালির নতুন আশার ও আনন্দের বার্তা বহন করে।
বাংলা নববর্ষের এই দিন নানা রকম উৎসাহ উদ্দীপনায় পালিত হয়ে থাকে। মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে শুরু হয় দিনটির আনন্দ উৎসব যার নতুন নাম “বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা”। বাঙালির পাতে থাকে পান্তা ভাত- ইলিশ মাছ,ব্যবসায়িরা “হালখাতা” উৎসবে মেতে ওঠেন,গ্রাম-গঞ্জে বসে বৈশাখী মেলা।
তেমনি “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়“এ বিরাজ করছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। এই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগ এ নববর্ষের উৎসব পালন করেছে। দীর্ঘ ৫ বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে পালিত হচ্ছে বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান। বর্ষবরণ শোভাযাত্রার মাধ্যমে এই উদযাপন শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বৈশাখী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রা শেষে শুরু হয় উৎসবকে ঘিরে নানা আয়োজন। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় ছেলেদের মোরগ লড়াই ও মেয়েদের মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো গ্রামীণ খেলা, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে মঞ্চে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লোকগান, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য ও নাটিকা পরিবেশন করে শিক্ষার্থীরা, যা পুরো ক্যাম্পাসে বয়ে আনে বাঙালিয়ানা ছোঁয়া।
পাশাপাশি বৈশাখী চত্বরে বসেছে বৈশাখী মেলা। যেখানে প্রতিটি বিভাগ, হল ও সংগঠন থেকে স্থাপন করা হয়েছে পিঠাপুলির স্টল। এসব স্টলে পরিবেশিত হয় বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা—পাটিসাপটা, চিতই, দুধচিটা, মালপোয়া সহ নানা মুখরোচক খাবার, যা মেলায় আসা দর্শনার্থীদের মন জয় করে নেয়।
আলপনার রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগ এ যেন প্রতিটি তুলির ছোয়াঁয় ফুটে উঠেছে বাঙালির আবেগ,ঐতিহ্যের জীবন্ত ক্যানভাস।রয়েছে নানা রকম বৈশাখী স্টল এবং বাঙালিয়ানা পান্তা ইলিশের আয়োজন।
বাংলা সনের প্রথম দিন(পহেলা বৈশাখ) শুধু একটি দিন নয় এটি বাংলা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি।
শুভ নববর্ষ ১৪৩২