ছাত্র আন্দোলনে প্রথম রক্তাক্ত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লেখক: ফয়সাল মিয়া, কুবি
প্রকাশ: ৯ মাস আগে
Oplus_131072

১৮ জুলাই ২০২৪, তিন বাহিনী পুলিশ, বিজিবি ও র‍‍্যাব এর উপস্থিতিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর প্রথমবারের মতো বরবর হামলা চালাই স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পুলিশ প্রশাসন।

দিনভর কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও লাঠি চার্জ করে পুলিশ। এই ঘটনার পর থেকে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে। এই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন হলগুলো বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। হল বন্ধের প্রতিবাদে ভিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে শিক্ষার্থীরা। তবুও হাসিনা সরকার জোড় পূর্বক হলগুলো বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়। এতে শিক্ষার্থীরা হল ছাড়তে বাধ্য হয় এছাড়া রাতের বেলায় বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে ভয় দেখানো হত শিক্ষার্থীদের। কিন্তু হলে থাকা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মেসে থেকে আন্দোলন চালু রাখে। রাতে মেসেও শিক্ষার্থীদের থাকতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ শহরের প্রত্যেকটি মেসে রিট দেয়। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সরাসরি শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়।

স্থানীয় লোকজন সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করলেও বুদ্ধি পরামর্শ, খাবার ও আশ্রয় দিয়ে সহায়তা করেছিল। রিক্সার, সিএনজি ও অটো ড্রাইভার থেকে শুরু করে সকল স্থরের মানুষ সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করলেও পরোক্ষভাবে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেছিল। কুমিল্লার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এক যুগে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের স্লোগানে উত্তপ্ত হতো কুমিল্লা জেলার শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো। এ সকল জায়গায় প্রতিনিয়ত অতর্কিত হামলা চালাত আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজের জীবন বাজি রেখে সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে আন্দোলন চালু রেখেছিল।

অবশেষে ৫ই আগস্ট মহা বিপ্লবের মাধ্যমে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।