কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান (হিমু) ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস (লতা) উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা সাড়ে এগারোটায় কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দীন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা, সহযোগী অধ্যাপক নাহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক মশিউর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ড. সাদেকুজ্জামান তনু, সহকারী অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক সাথী রানী কুন্ডু, সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ, সহকারী অধ্যাপক নাইমুল হুদা, সহকারী অধ্যাপক শারমিন রেজওয়ানা আফরিন রুম্পাসহ বিভাগের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন ।
এসময় জনতার সম্মুখে এক বক্তব্যে পাবলিক এডমিনিস্ট্রেশন এসোশিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন “লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস এর উপর যে সকল অছাত্র, বহিরাগত সন্ত্রাসী বর্বরোচিত হামলা করেছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ করেছে। বিভাগের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের একটাই দাবি যারা আমাদের শিক্ষকের উপর হামলা করছে অচিরেই তাদেরকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হউক। শিক্ষক এবং সাধারন শিক্ষার্থীরা যেনো নির্বিঘ্নে চলা-ফেরা করতে পারে প্রশাসন যেনো সেই পরিবেশ তৈরি করে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যে চলমান সংকট তৈরি হয়েছে তা অচিরেই সমাধান করে আগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হউক।”
প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হিজবুল্লাহ আরেফিন তাজবী বলেন, ‘ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন একটি জায়গায় কীভাবে একজন শিক্ষক আরেক শিক্ষকের উপর হামলা চালায়! এই রকম অমানবিক কর্মকান্ডের জন্য আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।
ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ সাদেকুজ্জামান বলেন, ‘এই প্রশাসনের নৈতিক স্থুলন হয়েছে। শান্তিপূর্ণ অবস্থানে একজন উপাচার্য যেভাবে মুর্শেদ রায়হান হিমুকে পিছন থেকে আঘাত করেছে তা মধ্যযুগের বর্বরতাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। উপাচার্যসহ যারা শিক্ষকদের উপর হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হোক। এছাড়া, আমি দাবি জানাই, উপাচার্যকে স্বীয় পদ হতে অতিদ্রুত অপসারণ করে এই সংকট সমাধান করা হোক।
লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকের উপর উপাচার্য হাত তোলার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই। একজন ভিসি হিসেবে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়কে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়েছন। গায়ে হাত তোলার মতো নোংরা ও বর্বর কাজ তিনি করেছেন। উনার কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? কতিপয় শিক্ষকদেরকে তিনি শিখান কীভাবে শিক্ষকদেরকে গায়ে হাত তুলতে হয়?কীভাবে লাঞ্চিত করতে হয়? আপনি এখানে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন আপনি অবাঞ্চিত। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে আর চায় না।
তিনি আরও বলেন, একজন ভাইস চ্যান্সেলর কীভাবে একজন শিক্ষকের গাঁয়ে হাত তুলেন। গাঁয়ে হাত তোলা সবচেয়ে বর্বরোচিত কাজ।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ এপ্রিল (রবিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য তার কার্যালয়ে প্রবেশ করতে গেলে শিক্ষক সমিতি বাঁধা প্রদান করে। তখন ছাত্রলীগ, শিক্ষক, উপাচার্যের ত্রিমুখী ধাক্কাধাক্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। সে সময় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুর্শেদ রায়হান হিমু ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জান্নাতুল ফেরদৌসসহ বেশ কিছু শিক্ষক আঘাতপ্রাপ্ত হন।