কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও খিচুড়ি ভোজ আয়োজনের টাকার উৎসকে কেন্দ্র করে দুইদিনে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে সমন্বয়ক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে টাকার উৎসের বিষয়টি নিয়ে দুই দিন দুই রকম বক্তব্য দিয়েছেন সমন্বয়ক জান্নাতুল ইভা।
গত ৬ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে খিচুড়ি ভোজ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজনের ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার উৎস জানতে চান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। টাকার হিসাব নিয়ে গতকাল ৭ ডিসেম্বর রাতে সংবাদ সম্মেলন করেন কিছু সমন্বয়কেরা। এখানেও তারা টাকার সুষ্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
খিচুড়ি ভোজ ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগ আমলের কাউন্সিলর গোলাম কিবরিয়ার কাছে দেড় লাখ টাকা পাঠান বলে গত ৬ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন জান্নাতুল ইভা। তবে গতকাল ৭ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে ইভা জানান তারিকুল ইসলাম ফান্ড এরাইজের জন্য বলেন। তিনি শুধু পরামর্শ দিয়েছেন কার কাছে যাব। যেহেতু ওনি (তারিকুল ইসলাম) আমার গ্রামের, আমার স্কুলের বড় ভাই তাই ওনার কাছে আবদার করতেই পারি যে আমাদের ফান্ড ম্যানেজ করে দেন।
টাকার উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে সমন্বয়কেরা বলেন, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা যেহেতু হয় নাই ঐ টাকা খরচ হয় নাই। খিচুড়ি ভোজের হিসাব আছে তবে এই মুহূর্তে নাই৷
গত ৬ ডিসেম্বর পুলিশ সুপার খিচুড়ি ভোজের দাওয়াতে আসলে তাকে ক্যাম্পাসে প্রবেশে বাঁধা দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা৷ এ বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়কেরা প্রশাসনের কাছে জবাব চান বলে জানান শিক্ষার্থীরা৷ তবে পুলিশ সুপার ক্যাম্পাসে আসছে এবিষয়ে প্রশাসনকে অবগত করা হয়নি বলে তারা জানান। এসময় তারা দাবি করেন, যারা ক্যাম্পাস গেটে পুলিশ সুপারকে আটকে দিয়েছে তারা আদু ভাই (অর্থাৎ ক্যাম্পাসের রানিং শিক্ষার্থী না)। তবে জানা যায়, যারা ৬ তারিখ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করেছে এবং পুলিশ সুপারকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ আটকে দিয়েছে তারা প্রত্যেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রানিং শিক্ষার্থী। এবং সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ থেকে ১২ তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সমন্বয়কদের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রোগ্রাম করলে তাদের জ্বলে কেনো? তাহলে কি আমরা ধরে নিব তারা ভারতের দালাল। একটা পক্ষ আমাদের আয়োজন বানচাল করতে চেয়েছে। তবে জানা যায়, টাকার উৎস নিয়ে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করলে সকল ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে পাবেল রানা দাবি করেন, যারা তারিকুল ইসলামকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে তাদের কে সে চিনেন না৷ এবং আন্দোলনে তাদেরকে দেখেননি। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮ তারিখ ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার পর তিনিসহ সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করা অনেকেই কুমিল্লার আন্দোলন রেখে বাসায় চলে যান৷
খিচুড়ি ভোজের টোকেন নিয়ে দুই রকম উত্তর দিয়েছেন কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়া সমন্বয়কেরা। খিচুড়ি ভোজের খাবার টোকেন একটিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং অপরটিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়কেরা জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টোকেনটি প্রিন্টিং মিস্টেক হয়েছে। তবে গত ৬ তারিখ কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব হুসাইন জানান ভিন্ন কথা৷ তিনি জানান টোকেনে সাধারণ শিক্ষার্থী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র দিয়েছি যেন সবাই আসতে পারে।