কুবিতে আন্তর্জাতিক সেমিনার আয়োজন করলো প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ

লেখক: ফয়সাল মিয়া, কুবি
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের দশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতি, ধর্ম ও প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। দুই দিনব্যাপী এই সেমিনার কুমিল্লার লালমাই এবং ময়নামতির ঐতিহাসিক বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পরিদর্শনের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে।

রোববার (২৬মে) সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হল রুমে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় এ সেমিনারটি শুরু হয়। এতে সাতটি সেশনে মোট ৩৬টি পেপার উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আগত গবেষকরা।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রেজওয়ানা আফরিন রুম্পার সঞ্চালনায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সোহরাব উদ্দিন সৌরভের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাফরিজা শ্যামা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনেওয়াজ চৌধুরী। এবং কী-নোট স্পীকার হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মনজিল হাজারিকা।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির তার বক্তব্যে বলেন, “পৃথিবীর পট পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ের গবেষণায়ও বিভিন্ন পরিবর্তন আসছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষকগণ প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় যথেষ্ট এগিয়ে যাচ্ছেন। যা প্রশংসনীয়। এই ধারা ধরে রাখতে পারলে আগামী দশ বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ দেশের অন্যতম সেরা বিভাগ হিসেবে বিবেচিত হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সংকটকাল চলছে। তবে সেটা কেটে যাবে। আমরা চেষ্টা করছি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্রান্তিকাল যাতে দ্রুতই কেটে যায়।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাফরিজা শ্যামা বলেন, “আমাদের কাছে টাকা আছে। আমাদের গবেষণা দরকার। কিন্তু সকল গবেষণা আমরা গ্রহন করি না। গবেষণা হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। আপনারা গবেষণা করুন, যতধরনের সহযোগিতা লাগে আমরা করবো।”

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনেওয়াজ চৌধুরী জানান, “একটা সময়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে বৌদ্ধদের বিহার ছিল অন্যতম। এখানে এমন কোন বিষয় ছিল না যা পড়ানো হতো না। শিক্ষার ক্ষেত্রে ইউরোপের চেয়ে কুমিল্লাসহ এই অঞ্চলের শিক্ষার ধারা ছিল উন্নত। কারণ সপ্তম-অষ্টম শতকে শালবন বিহার, আনন্দ বিহার, রুপবান মুড়া এসব ছিল আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়। আর অন্যদিকে হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড ছিল বারো শতকের। যা থেকে বুঝা যায় এশিয়া শিক্ষার ক্ষেত্রে কতটুকু এগিয়ে ছিল। ”

এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে কাজ করেন এমন ভারতীয় অধ্যাপক, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (চট্টগ্রাম), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ময়নামতি জাদুঘরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।