বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে বিসিএসে আইসিটি ক্যাডারের পদ সৃষ্টিসহ মোট চার দফা দাবি জানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি) আইটি সোসাইটি।
গত ৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের বারাবর একটি চিঠিতে এ দাবিগুলো জানানো হয়।
চিঠিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হলো, বাংলাদেশে আইসিটি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ উন্মুক্ত করতে বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের কর্ম ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে আইসিটি ক্যাডার সৃজন। অ্যাকাডেমিয়া ও শিল্পখাতের মধ্যে সহোযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা ও পদক্ষেপ গ্রহণ। বিশ্বমানের যোগ্যতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা প্লাটফর্ম এবং অত্যাধুনিক টুল যেমন IEE, ACM Digital Library, Scopus, Turnitin ইত্যাদিতে ফ্রি এক্সেসের ব্যবস্থা করা। বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় সফল হওয়ার লক্ষ্যে মানসম্পন্ন ইন্টার্নশিপ ও সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সোসাইটি এর সাধারণ সম্পাদক তওসিফ বিন পারভেজ জানান, “বর্তমান বিশ্বে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি অভূতপূর্ব গতিতে ঘটছে। বাংলাদেশও এই প্রগতির ধারায় নিজেকে সামিল করেছে, কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি যে আরও অনেক কিছু করার সুযোগ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আমাদের সোসাইটি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইসিটি জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। আমরা নিয়মিত সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করি, যেখানে শিক্ষার্থীরা আধুনিক প্রযুক্তি ও তার প্রয়োগ সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে। এছাড়াও, আমরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও প্রোগ্রামিং কনটেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করি।
তিনি আরো জানান, গত কয়েক বছরে, আমাদের সোসাইটির সদস্যরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সাফল্য অর্জন করেছে। তারা হ্যাকাথন, প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, এবং উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতেছে। এসব সাফল্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের জন্য গৌরব এনেছে। তবে, আমরা শুধু আমাদের প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের সামগ্রিক আইসিটি খাতের উন্নয়নে আরও বৃহত্তর পদক্ষেপ প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে, আমরা একটি আইসিটি ক্যাডার সৃজনের প্রস্তাব করছি। বর্তমানে সরকারি সেবা প্রদানে আইসিটির ব্যবহার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের অভাব প্রায়শই লক্ষ্য করা যায়। একটি নিবেদিত আইসিটি ক্যাডার এই ঘাটতি পূরণ করতে পারে। এটি শুধু সরকারি সেবাকেই উন্নত করবে না, বরং আইসিটি গ্র্যাজুয়েটদের জন্য একটি নতুন কর্মক্ষেত্র খুলে দেবে। ফলে, দেশের ডিজিটাল রূপান্তর আরও ত্বরান্বিত হবে।
আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এই দাবিগুলো যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী। আমরা আশা করি, সম্মানিত উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের এই দাবিগুলো সুবিবেচনায় নিবেন এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।”