কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ ( সঃ) ও ইসলাম ধর্মকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গ্রুপে এ বন্তব্যের বিভিন্ন স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোব সৃষ্টি হয় । বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতে আজ রাত ৯:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা বিশ্বনবীকে নিয়া কটুক্তিকারী শিক্ষার্থীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবী জানান উপস্থিত শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শ্রী স্বপ্নীল মুখার্জি ফেইসবুকের কমেন্ট ও পোস্টে ইসলাম ধর্ম নিয়ে অশালীন বক্তব্য,ফিলিস্তিনের নিয়ে অশালীন কথাবার্তা ও বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ ( সঃ) কে নিয়া কটুক্তি করে। এ সংক্রান্ত খবর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোব সৃষ্টি হয়।
কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, তার ফেসবুক আইডি থেকে গত ২০শে ফেব্রুয়ারি পোস্টের মন্তব্যে তিনি আসিফ আহমেদ নামে এক জন ব্যক্তিকে মেনশন করে বলেন, “হযরত যেখানেই যেত যুদ্ধ করতো। বদর না ফদর আরো কত কি নাম আছে। এলাকার মানুষগুলাকে একটা দিনও শান্তি দেয়নি।”
তিনি একই ব্যক্তিকে মেনশন করে আরো মন্তব্য করেন, “এ জন্যই মুসলিমদের সাথে কথা বলি না কারণ তাদের ব্রেইন নাই। আফগানিস্তান নিয়ে কথা বলতে বলতে হিন্দুধর্মের দেবতা টেনে নিয়ে এসে বলে টপিকের মাঝে থাকতে।” তার এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুক) প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
এ বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী হারিছ মিয়া জানান, ” আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের ধর্মের লোকদের সম্মান করি। কারণ, আমাদের ইসলাম ধর্মের বিশ্বাস হলো-আমরা সবাই আদম-হাওয়া আ. এর সন্তান। অর্থাৎ সবাই পরস্পর ভাইবোন। এটা প্রায় ধর্মেই বিশ্বাস। আমার একজন রুমমেট সনাতন ধর্মের। ক্লাসমেইটদের মধ্যেও সনাতন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের স্টুডেন্ট আছে। কই? আমরা তো কোনদিন কারো ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করি নাই। আমাদের মাঝে সম্মানের সাথে ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরস্পর অনেক কথা হয়। আমরা তো কটুক্তি না করে মিলেমিশেই থাকি। একে অপরের সহযোগি করি। সুতরাং যে বা যারাই ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করুক না কেন আমরা এটা সহ্য পারি না। কটুক্তিকারীর স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো ইনশাআল্লাহ”
শামিম হোসেন নামে এক জন লিখেছেন, “এটা পুরান , অন্তত ১০০ বারের উপরে ওয়ার্নিং দেওয়া হইছে এবং প্রতিবারই খুব নত হয়ে মাফ চাইছে। আমাদের সিনিয়র, আমরা (১৫ ব্যাচ) এবং তার বর্তমান ব্যাচ (১৬) এর পোলাপান এরপর দুই চোখেও দেখতে পারেনা শুধু ফেসবুকে এসব কমেন্টের জন্য। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আর নয়, এটার বিরুদ্ধে এবার একটা ব্যবস্থা করতেই হবে। ”
এ বিষয়ে প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, “আমি ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেখেছি এবং এটা যেহেতু ধর্মীয় ইস্যু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করে রেখেছি। যখন লিখিত অভিযোগ পাবো তখন তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমাদের কাছে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে আমরা আগামীকাল প্রক্টোরিয়াল বডি বসবো। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করা হবে। যদি সত্যতা প্রমাণিত হয়, তাহলে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ বিষয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র মজুমদার বলেন, “এ ব্যাপারে আমি অবগত না। তবে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সে ধর্ম অবমাননা করতে পারে না। তবে অবমাননার অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিভাগ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না, প্রশাসন থেকে পদক্ষেপ নিবে।”